সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে প্রতীকী লাশ নিয়ে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তের উদ্দেশ্যে একক পদযাত্রায় বের হওয়া হানিফ বাংলাদেশি পদযাত্রার ১৮তম দিনে কুড়িগ্রাম পৌঁছেছেন। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে পৌঁছান তিনি। সেখানে রেল, নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণ কমিটির পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
হানিফ জানান, আজ কুড়িগ্রাম জেলা শহরে পৌঁছে রাত্রী যাপন করে আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার উদ্দেশ্যে আবারও পদযাত্রা শুরু করবেন তিনি।
এর আগে, ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে একক পদযাত্রা শুরু করেন হানিফ বাংলাদেশি।
হানিফ বাংলাদেশির বাড়ি নোয়াখালি জেলা সদরের জাহানাবাদ গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল মান্নান।
পদযাত্রা সম্পর্কে হানিফ বলেন, বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী ও বন্ধু রাষ্ট্র। আমরা চাই ভারত প্রতিবেশীর সঙ্গে মানবিক আচরণ করুক। কিন্তু প্রতিনিয়ত ভারতের বিএসএফ বিভিন্ন ঠুনকো অযুহাতে নিরীহ বাংলাদেশিদের হত্যা করে চলছে। যখন যে দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে তারা কোনও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এই সরকারের ১২ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে, এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে প্রায় ৫০০ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ। তিনি সীমান্তে সংঘটিত প্রত্যেকটি হত্যাকান্ডের তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, অবিলম্বে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। বহুমাত্রিক কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীন ও মর্যাদাপূর্ণ প্রতিবেশীর সম্পর্ক নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি।
পরে রাজারহাট থেকে কুড়িগ্রাম শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন হানিফ।
হানিফ জানান, আজ কুড়িগ্রাম শহরে রাত যাপন করে আগামীকাল ফুলবাড়ী উপজেলা শহরের উদ্দেশ্যে পদযাত্রা করবেন। সেখান থেকে পদযাত্রার ২০ তম দিনে বুধবার সকালে উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তের উদ্দেশ্যে পদযাত্রা করবেন তিনি। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি এই সীমান্তেই বিএসএফ’র গুলিতে প্রাণ হারান বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী। হানিফ ফেলানীর বাবা-মার সাথে সাক্ষাত করবেন বলেও জানান।
এদিকে, গণ কমিটি,কুড়িগ্রাম জেলা শাখা সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম শহরের রেল স্টেশন এলাকায় জেলা কমিটির পক্ষ থেকে হানিফ বাংলাদেশিকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।