ঢাকায় ব্যক্তি পর্যায়ে আর ৮ তলার বেশি ভবন নির্মাণ করা যাবে না। ডিটেইল এরিয়া প্লানে (ড্যাপ) নতুন অঞ্চল পরিকল্পনায় এই প্রস্তাব করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)। ২০ বছর মেয়াদী এই ড্যাপ আগামী ডিসেম্বর মাসে চূড়ান্ত হবে বলে জানা গেছে।
রাজউকের কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা শহরের স্বার্থেই এমন প্রস্তাব করা হয়েছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে রাজধানীর ওপর চাপ কমবে। একই সঙ্গে নাগরিক সেবার মানও বাড়বে। নতুন ড্যাপের বিভিন্ন দিক নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত নেয়া হচ্ছে। এছাড়াও ওয়েবসাইটে বা সরাসরি রাজউক কার্যালয়ে গিয়ে মতামত দেয়া যাবে। আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত এই মতামত গ্রহণ করা হবে।
এ সংক্রান্ত খসড়া গত ২ সেপ্টেম্বর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। এতে জনঘনত্ব অনুযায়ী ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়াও জরিমানা দিয়ে অনুমোদনহীন ভবন বৈধ করা, ভূমির পুনরুন্নয়ন, ভূমি পুনর্বিন্যাস, উন্নয়ন স্বত্ব প্রতিস্থাপন পন্থা (জলাশয় রক্ষাসংক্রান্ত পরিকল্পনা), ট্রানজিটভিত্তিক (পরিবহনের স্টেশন) উন্নয়নসহ বেশ কিছু নতুন কর্মকৌশল যুক্ত করা হয়। এসব বিষয় আগের কোনো পরিকল্পনায় ছিলো না।
নতুন ড্যাপে দেখা গেছে, রাজউকের ১ হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে মোট ৪৬৮টি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। এরপর জরিপ করে প্রতিটি ব্লকের জনসংখ্যার ধারণক্ষমতা, সড়ক অবকাঠামো, নাগরিক সুবিধা এবং উন্নয়নের ধরনের ওপর ভিত্তি করে আবাসিক ভবনের উচ্চতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যেসব ব্লকে নাগরিক সুবিধা, ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক ভালো, উন্মুক্ত স্থান বেশি- সেই সব ব্লকের ভবনের উচ্চতা বেশি ধরা হয়েছে। আর যেসব এলাকায় বিপরীত চিত্র পাওয়া গেছে, সেসব এলাকার ভবনের উচ্চতা কম ধরা হয়েছে।
এতোদিন ধানমন্ডিতে সর্বোচ্চ ১৪ তলা পর্যন্ত আবাসিক ভবন নির্মাণ করার অনুমতি দেয়া হতো। কিন্তু নতুন এই পরিকল্পনার কারণে এখন থেকে তা আর নির্মাণ করা যাবে না। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া রাজধানীসব এলাকার জন্য এই প্রস্তাবটি প্রযোজ্য হবে। এছাড়াও রাজউকের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন এবং সাভার পৌর এলাকায় আবাসিক ভবন হবে সর্বোচ্চ ৬ তলা।
তবে যেসব ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গেছে বা ভবন নির্মাণের অনুমোদন ইতিমধ্যে নেয়া হয়ে গেছে বা নতুন ড্যাপ চূড়ান্ত হওয়ার আগে নির্মাণ অনুমোদন নেয়া হবে সে ক্ষেত্রে উচ্চতার এই বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না।