যাবজ্জীবনের প্রাথমিক অর্থ দণ্ডিতের বাকি জীবন হলেও দণ্ডবিধি ও ফৌজদারী কার্যবিধির আওতায় সাজা হয় ৩০ বছর। তবে আদালত নির্দিষ্ট করে আমৃত্যু কারাদণ্ড বলে দিলে আসামিকে বাকি জীবন জেলেই কাটাতে হবে বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে আমৃত্যু কারাবাস’ আপিল বিভাগেরই এমন রায় ‘অসামঞ্জস্যপূর্ণ’ দাবি করে আসামিপক্ষ যে পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেছিল, সে আবেদন নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সাত বিচারকের ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দিয়েছে।
ভার্চুয়াল আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেনন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আর আসামি পক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আইনজীবী শিশির মনির।
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ ১ ডিসেম্বর রায়ের দিন ধার্য করেছিলেন।
গত বছরের ১১ জুলাই আপিল বেঞ্চ এ রিভিউ শুনানি শেষে বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। এ রিভিউ শুনানিতে আইনি মতামত তুলে ধরেন চার অ্যামিকাস কিউরি। তারা হলেন-ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, এ এফ হাসান আরিফ, অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান, মুনসুরুল হক চৌধুরী ও এ এম আমিন উদ্দিন।
একটি হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। তাদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে।
শুনানি নিয়ে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট রায়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। তারা হলেন আতাউর মৃধা ওরফে আতাউর ও আনোয়ার হোসেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধ আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন।
২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আপিল বিভাগ যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাসসহ ৭ দফা অভিমত দেন। আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আসামি আতাউর মৃধা আবেদন করেন।