করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) মহামারীতে দুই বছরের মধ্যে দেশের দারিদ্র্যের হার দ্বিগুণ বেড়ে ৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) এক জরিপে উঠে এসেছে।
শনিবার ভার্চুয়াল আলোচনায় জরিপের তথ্য তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালে জিইডি সানেমের গবেষণায় দেখা গেছে- দারিদ্র্যের হার ২১ দশমিক ৬০ শতাংশে নেমেছিল। কিন্তু সানেমের ২০২০ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরের গবেষণা বলছে, দারিদ্র্যের হার বেড়ে ৪২ শতাংশ হয়েছে।’
এই দারিদ্র্যের হার শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি বেড়েছে জানিয়ে সেলিম রায়হান বলেন, ২০১৬ সালের বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী গ্রামে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৬ দশমিক ৪০ শতাংশ। ২০১৮ সালের সানেমের গবেষণায় এই হার নামে ২৪ দশমিক ৫০ শতাংশে।
‘কিন্তু সানেমের ২০২০ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরের গবেষণা বলছে, বাংলাদেশের গ্রামে দারিদ্র্যের হার বেড়ে হয়েছে ৪৫ দশমিক ৩০ শতাংশ’ যোগ করেন তিনি।
একইভাবে শহরে দারিদ্র্যের হার ২০১৬ সালে ১৮ দশমিক ১৯ শতাংশ থেকে বেড়ে যথাক্রমে ২০১৮ সালে ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ ও ২০২০ সালে তা বেড়ে ৩৫ দশমিক ৪০ শতাংশ হয় বলে জানান সানেমের নির্বাহী পরিচালক।
তিনি জানান, বাংলাদেশের অতি দারিদ্র্যের হার ২০১৮ সালের ৯ দশমিক ৪০ শতাংশ থেকে ২০২০ সালে বেড়ে হয়েছে ২৮ দশমিক ৫০ শতাংশ।
এছাড়া রংপুর, রাজশাহী এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
দারিদ্র্যের হারের সঙ্গে আয় বৈষম্যও বেড়েছে। মহামারী শুরুর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশের দরিদ্রতম ২০ শতাংশ মানুষ দেশের মোট আয়ের ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ পেত। আর দেশের মোট আয়ের ১৫ দশমিক ৮২ শতাংশ আয় করত দেশের ধনী ৫ শতাংশ মানুষ।
কিন্তু করোনার প্রভাবে সেই অবস্থা পাল্টে এখন দেশের মোট আয়ের ১৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ ধনী ৫ শতাংশের দখলে। আর মোট আয়ের ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ দরিদ্রতম ২০ শতাংশের দখলে বলে জরিপে উঠে এসেছে।