সেনাপ্রধানকে হেয় করা মানে প্রধানমন্ত্রীকে হেয় করা বলে মন্তব্য করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘কেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধানকে টার্গেট করা হচ্ছে। এ প্রশ্নের জবাব আমি আপনাদের ওপর ছেড়ে দিলাম। বুঝে নেন, খুঁজে নেন। কেন, কারণ এ সেনাপ্রধানকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন, সেনাপ্রধানকে হেয় করা মানে মননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হেয় করা।’
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আর্মি অ্যাভিয়েশন গ্রুপে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন সেনাপ্রধান। সেখানে আল-জাজিরার একটি প্রতিবেদন নিয়ে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মতো একটি প্রতিষ্ঠান, যেটা জাতির গর্ব, দেশের গর্ব, এই প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চলছে। সেনাবাহিনী একটি প্রশিক্ষিত, সুশৃঙ্খল বাহিনী, আগের চেয়ে অনেক বেশি সুসংহত। সেনাবাহিনীর ‘চেইন অব কমান্ড’ অত্যন্ত কার্যকরী এবং সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্য ঘৃণাভরে এ ধরনের অপচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করছে।’
আল জাজিরার প্রতিবেদন প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমাদের চেইন অব কমান্ডে যারা আছেন, তাদের সবাই এ ব্যাপারে সতর্ক আছি। সেনাবাহিনীতে এ ধরনের অপপ্রচার বিন্দুমাত্র আচ আনতে পারবে না। সেনাবাহিনী দেশের সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সংবিধানকে সমুন্নত রাখার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ, বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অনুগত। বর্তমান সরকারের যে কোনো আদেশ, নির্দেশ পালনে সদা প্রস্তুত। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ, বহির্বিশ্বে যেকোনো সমস্যা মোকাবিলার জন্য সাংবিধানিকভাবে আমরা শপথবদ্ধ।’
তিনি বলেন, ‘আমার কারণে আমার প্রতিষ্ঠান, আমার অরগানাইজেশন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং আমাদের সরকার যেন কোনোভাবে বিব্রত না হয়, বিতর্কিত না হয়, সে বিষয়ে আমি সম্পূর্ণ সচেতন আছি।’
আল–জাজিরার প্রতিবেদন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আপনার বিরুদ্ধে মামলা আছে, সাজা আছে, কিন্তু গতকাল যদি আপনার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকে, তাহলে আপনাকে কি আজ ফিউজিটিভ (পলাতক) বলা যাবে? আপনাকে কি সাজাপ্রাপ্ত বলা যাবে? যখনই আপনি অব্যাহতি পেয়ে যান কোনো একটা চার্জ থেকে, তার পরের দিন থেকে আপনি যেকোনো মুক্ত নাগরিকের মতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাইদের সম্পর্কে যে অপপ্রচার হয়েছে, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া আছে। খুব শিগগির আমার পরিবারের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে একটি সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হবে। সেনাপ্রধান হিসেবে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি, আমার অবস্থান, দায়িত্ব সম্পর্কে আমি সম্পূর্ণ সচেতন।’
মালয়েশিয়াতে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করা প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমার ভাইয়ের সঙ্গে আমি মালয়েশিয়াতে যখন দেখা করেছি, তখন তার নামে কোনো মামলা ছিল না। যে একটা ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ছিল, সেটিও অব্যাহতিপ্রাপ্ত ছিল। সে অব্যাহতি মার্চ মাসে হয়েছিল, এপ্রিলে আমি গিয়েছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে আল–জাজিরা যে স্টেটমেন্ট দিয়েছে, সেটি সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্যে দিয়েছে। কারণ সেদিন আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে না কোনো সাজা ছিল, না তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল। তার আগেই মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’