করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সারা দেশে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। জরুরি সেবাখাত ছাড়া সরকারি বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। চলছে না গণপরিবহন। এই লকডাউন চলবে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে এরইমধ্যে আগামীকাল (রোববার) থেকে শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দোকান ও শপিংমল খোলা রাখার নির্দেশনা দিয়ে শুক্রবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এছাড়া আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে গণপরিবহণও চলাচলের জন্য ছেড়ে দেওয়া হতে পারে-এমন আভাস দিয়েছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেন, চলমান ‘লকডাউন’ ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে। দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকার কথা বিবেচনায় রেখে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধীরে ধীরে সবকিছু খোলার পাশাপাশি গণপরিবহণ ও সীমিত পরিসরে সরকারি-বেসরকারি অফিস খোলার কথা চিন্তা করছে সরকার।
তিনি বলেন, গণপরিবহণ চালুর বিষয়টি সিদ্ধান্তের পর্যায়ে আছে। আগামী ২৮ এপ্রিল এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আমাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে হবে। শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সেটা করা হবে। যেভাবে আস্তে আস্তে বন্ধ হয়েছে, সেভাবে আস্তে আস্তে সব খুলবে।
এদিকে চলমান লকডাউন শেষ হলে ২৯ এপ্রিল থেকে গণপরিবহণ চালু করার দাবি জানিয়েছেন পরিবহণ মালিকরা। তারা বলছেন, রাজধানীসহ দূরপাল্লার পথেও বাস চালু করতে চান তারা। এ ক্ষেত্রে সীমিত আকারে অর্থাৎ অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে চালানো যেতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়েও তারা তৎপর থাকবেন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করেছেন। ২৮ এপ্রিলের আগে গণপরিবহণ চালুর কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। তবে ২৯ এপ্রিল থেকে গণপরিবহণ যাতে চালু করা যায়, সে বিষয়ে তারা জোর দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার জনসমাগম এড়াতে প্রথমে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে। পরে এ নিষেধাজ্ঞা আরও দুই দিন বাড়িয়ে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। তবে সে সময় সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্পকারখানা, গণপরিবহণ চালু ছিল বলে এই লকডাউন ছিল অনেকটাই অকার্যকর।
এরপর ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আটদিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়। লকডাউনের মধ্যে দোকান-শপিংমল বন্ধ রাখাসহ ১৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। সেই মেয়াদ শেষ হয় গত বুধবার (২১ এপ্রিল) মধ্যরাতে। তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির তখনো উন্নতি না হওয়ায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয় ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত। যা এখনো চলমান। এ সময় সব ধরনের অফিস ও পরিবহণ বন্ধের পাশাপাশি বাজার-মার্কেট, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।