bus

আসছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের সময় আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ রাখার পরিকল্পনা করছে সরকার। করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে সারা দেশে চলমান লকডাউন পরিস্থিতি পর্যালোচনা সভায় এ ব্যাপারে আলোচনা হয়। এছাড়া ঈদের সময় পোশাক শ্রমিকদের ছুটি না দেওয়ার জন্য মালিকদের প্রস্তাব পাঠানোর ব্যাপারেও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

গতকাল রবিবার করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাত ‘চলমান লকডাউন পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ’ বিষয়ে এক ভার্চ্যুয়াল সভায় উপস্থিত মেয়র, সচিব, গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের কাছ থেকে এমন প্রস্তাব উঠে এসেছে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই সভায় সভাপতিত্বে করেন।

সভায়, বিপণিবিতানগুলোতে যদি স্বাস্থ্যবিধি মানা না হয়, তবে দু-এক দিন দেখে তা বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত এসেছে। এক্ষেত্রে সরকার জরিমানাসহ কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, পরিবহন বন্ধ করতে হলে সব বন্ধ রাখতে হবে। আর নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে ঈদের পরে নেওয়ার মতামত দেন তিনি। তিনি ঈদের পরের তিন সপ্তাহ কড়াকড়ি করার কথা বলেন।

সূত্র জানায়, বৈঠকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আন্তঃজেলা বাসগুলো ঢাকার ভেতরে না ঢুকে যেন ঢাকার বাইরে টার্মিনালে থাকে। তিনি আন্তঃজেলা লঞ্চ ও রেলওয়ে বন্ধ থাকার ওপরও জোর দেন। তিনি বলেন, সদরঘাট, কমলাপুর, সায়েদাবাদ—তিনটি জায়গা জনসমাগমের উৎস। এই তিন স্থান বিবেচনায় রেখে যেন লকডাউনের রূপরেখা তৈরি করা হয়।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বিপণিবিতানগুলোর ভয়াবহ অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, গুলশানের যতগুলো মার্কেট আছে, সব কটিতেই ভয়াবহ অবস্থা। স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। তিনি তাঁর এলাকার ৭২ জন কাউন্সিলর ও পুলিশের সমন্বয় করে এ অবস্থা মোকাবিলা করতে পারবেন বলে উল্লেখ করেন।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গাজীপুর সিটিতে ২২ থেকে ২৪ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। ঈদের দু-তিন আগে থেকে ২৪ ঘণ্টা বাস, ট্রাক দিয়ে তাঁরা যাওয়া-আসা করেন। এর ফলে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। ঈদের ছুটিতে যেন তাঁরা আসা-যাওয়া না করেন, এমন ব্যবস্থা নিতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস বলেন, ঈদের সময় চলাচল বন্ধ করতে হলে মালিকদের পদক্ষেপ নিতে হবে। তাঁদের বলতে হবে কেউ ছুটি পাবে না। না হলে আগের ১৮ দফা মেনেই আমরা সামনে এগোতে পারি।

সার্বিক বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সংক্রমণের বড় জায়গা বিপণিবিতান। যদি দোকানপাটে কেউ মাস্ক না পরে তাহলে বন্ধ করে দেওয়াই ভালো। এ ছাড়া আন্তঃজেলা চলাচল, আন্তঃশহর চলাচল কোনোভাবেই করা যাবে না। গণপরিবহন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে পরিবহন খাতকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সামাজিক বা রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। এবারের ঈদে আমরা যে যেখানে আছি, সেখানেই থাকতে হবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here