বয়স্ক পুরুষ জন টিনিসউড
Photo Credit: guinnessworldrecords

১১২ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ জন আলফ্রেড টিনিসউডের মৃত্যু হয়েছে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস মঙ্গলবার জানিয়েছে যে কয়েক মাস আগে তাকে বিশ্বের প্রবীণতম পুরুষ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।

টিনিসউড সোমবার উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের সাউথপোর্টে একটি কেয়ার হোমে “সংগীত ও ভালোবাসায় ঘেরা পরিবেশে” শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

১৯১২ সালের আগস্টে লিভারপুলে জন্মগ্রহণকারী টিনিসউড তার স্ত্রী ব্লডওয়েনের সঙ্গে এক নৃত্য অনুষ্ঠানে দেখা করেন এবং ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাকে বিয়ে করেন। সেই সময় তিনি রয়্যাল আর্মি পে কর্পসে কাজ করতেন, যা আর্থিক এবং খাদ্য সরবরাহের দায়িত্বে ছিল।

দুটি বিশ্বযুদ্ধ ও দুটি মহামারি পার করেছিলেন

দুটি বিশ্বযুদ্ধ ও দুটি বৈশ্বিক মহামারি পার করেছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ জন টিনিসউড। তিনি তার স্ত্রী ব্লডওয়েনের সঙ্গে লিভারপুলে একটি ড্যান্স পার্টিতে পরিচিত হয়েছিলেন। ১৯৪২ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। ১৯৮৬ সালে ব্লডওয়েনের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাঁরা ৪৪ বছর একসঙ্গে ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর র‍য়্যাল মেইলে কাজ শুরু করেন আলফ্রেড। পরে শেল ও বিপি কোম্পানিতেও অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন। অবসরে গিয়েছিলেন ১৯৭২ সালে। পরিবার জানিয়েছে, তিনি একটি ‘সক্রিয় অবসরকালীন জীবন’ কাটিয়েছিলেন।

লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের ভক্ত

লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন জন টিনিসউড। তিনি ক্লাবের ৬৬টি শীর্ষ ট্রফির মধ্যে মাত্র দুটি মিস করেছিলেন।

দীর্ঘায়ুর রহস্য

তার দীর্ঘায়ুর রহস্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বিবিসিকে বলেছিলেন, তিনি যুবক বয়সে খুব সক্রিয় ছিলেন এবং অনেক হাঁটতেন। তিনি তার দীর্ঘ জীবনের কোনো বিশেষ কারণ খুঁজে পাননি। তিনি বলতেন, “আমরা সবাই একই, কেউ বেশি বাঁচে, কেউ কম। এটা আমাদের হাতে নেই।”

স্বাস্থ্য ভালো রাখতে

স্বাস্থ্য ভালো রাখতে তিনি মধ্যপন্থী উপায় অবলম্বন করতেন। তিনি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে বলেছিলেন, কোন কিছু বেশি খাওয়া, বেশি পান করা, বেশি হাঁটা, এ সব কিছুই শরীরের জন্য ক্ষতিকর।” খাবারের ব্যাপারে তিনি খুব একটা কড়াকড়ি করতেন না। শুক্রবারের মাছ ভাজা (Battered Fish) ও চিপস ছাড়া, বাকি দিন যা পেতেন, তাই-ই খেতেন।

পরিবারের স্মৃতি

পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—আলফ্রেডের মধ্যে অনেক ভালো গুণ ছিল। তিনি বুদ্ধিমান, সিদ্ধান্ত প্রণেতা, সাহসী, যে কোনো সংকটের সময় শান্ত, গাণিতিক প্রতিভাসম্পন্ন এবং একজন অসাধারণ আলাপী মানুষ ছিলেন। এসব গুণই তাঁকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রয়্যাল আর্মিতে তাঁর সামরিক সেবায় অবদান রেখেছিল।

জন টিনিসউডের মৃত্যুতে গোটা বিশ্ব শোকাহত। তাঁর দীর্ঘ জীবন ও অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

সর্বোচ্চ বয়সে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি

ইতিহাসে সর্বোচ্চ বয়সে মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তি হিসেবে জাপানের জিরোইমন কিমুরার নাম গিনেস বিশ্ব রেকর্ডে স্থান পেয়েছে। তিনি ১১৬ বছর ৫৪ দিন বেঁচে ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here