বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস

আজ ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। প্রতি বছর এই দিনটি বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এর প্রতিরোধের গুরুত্ব বোঝাতে পালিত হয়।

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস প্রথম চালু করা হয়েছিল ১৯৯১ সালে ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন (IDF) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মাধ্যমে, যেহেতু তখন বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এই দিনটি স্যার ফ্রেডেরিক বেন্টিং-এর জন্মদিন উপলক্ষে পালন করা হয়, যিনি ১৯২২ সালে চার্লস বেস্ট-এর সঙ্গে ইনসুলিন আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রায় ৪২ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। দক্ষিণ এশিয়ায় এর প্রাদুর্ভাব আরও বেশি। বাংলাদেশে প্রতি ১০০ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে প্রায় ১৪ জন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, যা বিশ্বের গড়ের চেয়ে অনেক বেশি। আরও ভয়াবহ বিষয় হল, প্রায় অর্ধেক ডায়াবেটিস রোগী জানেনই না যে তারা এই রোগে আক্রান্ত।

বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির মতে, দেশে প্রায় ১ কোটি ৩১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছেন। ২০২৫ সালের মধ্যে এই সংখ্যা দেড় কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীতে প্রতি ১০ সেকেন্ডে একজন ডায়াবেটিস রোগীর মৃত্যু হয়।

প্রতি বছর, বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবসে একটি নির্দিষ্ট থিম নির্ধারণ করা হয় যা ডায়াবেটিসের বিভিন্ন দিক তুলে ধরার উদ্দেশ্যে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা ও সচেতনতার জন্য থিমগুলোতে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন, প্রাথমিক যত্ন, ওষুধ ও ইনসুলিনের প্রাপ্যতা ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

ডায়াবেটিস সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

  • ডায়াবেটিস কি?: ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যেখানে শরীরের ইনসুলিন উৎপাদন বা ব্যবহারে সমস্যা দেখা দেয়, ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। এই অবস্থায় সঠিক চিকিৎসা না করলে হার্ট, কিডনি, চোখ এবং নার্ভের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ধরন: ডায়াবেটিস প্রধানত তিনটি ধরন রয়েছে — টাইপ ১, টাইপ ২, এবং গর্ভাবস্থাজনিত ডায়াবেটিস।

  • টাইপ ১: শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।
  • টাইপ ২: শরীর ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে, কিন্তু তা যথেষ্ট কার্যকর নয়।
  • গর্ভাবস্থাজনিত ডায়াবেটিস: গর্ভাবস্থায় মায়েদের মধ্যে দেখা দেয়।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ: আপনি চাইলেই খুব সহজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ডায়াবেটিস প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

সচেতনতা বৃদ্ধি: ডায়াবেটিসের সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং সচেতনতা জরুরি, কারণ প্রাথমিক অবস্থায় এটি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস এই সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here