ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়া মূলত মশা বাহিত ভাইরাসজনিত রোগ। এগুলি প্রায়শই একই অঞ্চলে দেখা যায় এবং লক্ষণগুলিও অনেকটা মিল থাকায় অনেকেই এগুলিকে গুলিয়ে ফেলেন। আসুন, এই রোগগুলোর মধ্যে পার্থক্য ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
১. ডেঙ্গু
- কারণ: ডেঙ্গু ভাইরাস (DENV), যার চারটি প্রকারভেদ (সেরোটাইপ) রয়েছে।
- লক্ষণ: জ্বর (উচ্চ তাপমাত্রা), তীব্র মাথাব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা, পেশি ও গিঁটে ব্যথা, ত্বকে ফুসকুড়ি, প্লেটলেট সংখ্যা কমে যাওয়া (যা গুরুতর হতে পারে)
- জটিলতা: ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম, যা প্রাণঘাতী হতে পারে।
- প্রতিরোধ: মশার কামড় থেকে বাঁচা এবং পরিষ্কার পরিবেশ বজায় রাখা।
২. জিকা ভাইরাস
- কারণ: জিকা ভাইরাস (ZIKV)।
- লক্ষণ: মৃদু জ্বর, গিঁটে ব্যথা, চোখ লাল হওয়া (কনজাংটিভাইটিস), ফুসকুড়ি
- জটিলতা: গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে শিশুদের মাইক্রোসেফালি (মাথা ছোট হওয়া) ও অন্যান্য জন্মগত ত্রুটি।
- স্নায়বিক সমস্যা (যেমন: গুলেন বারে সিনড্রোম ( Guillain–Barré syndrome))।
- প্রতিরোধ: মশার কামড় থেকে বাঁচা এবং গর্ভাবস্থায় সতর্ক থাকা।
৩. চিকুনগুনিয়া
- কারণ: চিকুনগুনিয়া ভাইরাস (CHIKV)।
- লক্ষণ: আকস্মিক জ্বর, গুরুতর গিঁটে ব্যথা (যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে), পেশি ব্যথা, মাথাব্যথা এবং ফুসকুড়ি
- জটিলতা: সাধারণত প্রাণঘাতী নয়, তবে দীর্ঘমেয়াদে গিঁটে ব্যথা স্থায়ী হতে পারে।
- প্রতিরোধ: পরিষ্কার পরিবেশ এবং মশার বিস্তার রোধ।
মিল এবং পার্থক্য
মিল:
- এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়।
- মশার কামড় দিনের বেলা বেশি হয়।
- প্রতিরোধের মূল পদ্ধতি হলো মশার বিস্তার রোধ।
পার্থক্য:
- লক্ষণ ও জটিলতার ধরণ ভিন্ন।
- জিকা গর্ভাবস্থায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, আর ডেঙ্গু প্রাণঘাতী হতে পারে।
- চিকুনগুনিয়ায় দীর্ঘমেয়াদে গিঁটে ব্যথার ঝুঁকি বেশি।
মশা নিয়ন্ত্রণের উপায়
- পানি জমে থাকে এমন স্থান পরিষ্কার করা।
- মশারি ব্যবহার করা।
- মশা repellents ব্যবহার করা।
- ফুলহাতা জামা-কাপড় পরা।
- রোগাক্রান্ত হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
- পুষ্টিকর খাবার খান এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
- যদি উপরোক্ত লক্ষণগুলি দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
Disclaimer: এই তথ্যগুলি কেবল সাধারণ ধারণার জন্য। কোনো রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অত্যন্ত জরুরি।