মালয়েশিয়ায় যেতে একজন শ্রমিকের বাংলাদেশ অংশে খরচ ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
বুধবার (৬ জুলাই) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
ইমরান আহমদ জানান, মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়ার খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ অংশে কর্মীদের খরচ ধরা হয়েছে ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা।
আজ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত তথ্য নোটিশ আকারে দিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
দীর্ঘ তিন বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের ডিসেম্বরের শুরুর দিকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে অনুমোদন দেয় মালয়েশিয়া।
বাংলাদেশ থেকে সব পেশার শ্রমিক নেওয়ার অনুমোদনের ঘোষণা দেয় দেশটি। এ ঘোষণার নয় দিনের মাথায় গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর দুই দেশ একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে। সমঝোতা স্মারকের শর্ত মোতাবেক কর্মীদের বিমান ভাড়াসহ যাবতীয় ব্যয় মালয়েশিয়ার নিয়োগকারীরা বহন করবে। কিন্তু কর্মী পাঠানো শুরুর আগেই নতুন শর্ত আসে কুয়ালামপুরের পক্ষ থেকে।
মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম সারাভারান প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীকে এক চিঠি দিয়ে তাদের ২৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ করার বার্তা দেন। তবে ঢাকা এ শর্ত মেনে নিতে রাজি না হওয়ার পাশাপাশি ফিরতি বার্তায় নিবন্ধিত এক হাজারের বেশি রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা মালয়েশিয়ার কাছে হস্তান্তর করে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য বলছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ৭৫ হাজার ৯২৭ জন, ২০১৯ সালে ৫৪৫ জন, ২০২০ সালে ১২৫ জন এবং চলতি বছর মাত্র ১৪ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় কর্মী হিসেবে গেছেন। এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১০ লাখ ৫৭ হাজার ২১৩ বাংলাদেশি কর্মী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
এদিকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১২ জুন মালয়েশিয়ায় যেতে ইচ্ছুক কর্মীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করেছে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি)। জেলা কর্মসংস্থান অফিস কিংবা অনলাইনে ‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপের মাধ্যমে এই নিবন্ধন শুরু হয়। মালয়েশিয়ায় গমনেচ্ছু কর্মীদের বিএমইটির ডাটাবেজে নিবন্ধন বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন অনুযায়ী বিএমইটি ডাটাবেজে নিবন্ধিত কর্মীর তালিকা থেকে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে দৈবচয়নের ভিত্তিতে কর্মী নির্বাচন করার বিধান রয়েছে। সেই অনুযায়ী, মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু কর্মীদের বিএমইটি ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অনুরোধ করা যাচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএমইটির আওতাধীন সব জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস (ডিইএমও) অথবা নির্ধারিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (টিটিসি) সরাসরি উপস্থিত হয়ে নিবন্ধন করা যাবে। প্রতিটি সফল নিবন্ধনের জন্য ২০০ টাকা সরকারি ফি (অফেরতযোগ্য) পরিশোধ করতে হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য নিকটস্থ জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস (ডিইএমও) বা টিটিসি’র সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
বিএমইটি জানায়, শর্ত হিসেবে কর্মীর বয়স ১৮-৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। নিবন্ধন নম্বর ও এর কার্যকারিতা নিবন্ধনের তারিখ থেকে ২ বছর বহাল থাকবে। ইতোমধ্যে যারা বিদেশ গমনের জন্য নিবন্ধন করেছেন, তাদের নতুন করে নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই। তবে নিবন্ধনকালে কাঙ্ক্ষিত দেশ ও পেশা নির্বাচন করা না থাকলে আপডেট করা যাবে।