বছর ঘুরে পবিত্র রমাজন মাসের পর আমাদের মাঝে হাজির হলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। “ঈদ” শব্দের অর্থ আনন্দ বা উদ্যাপন। ‘ফিতর’ শব্দের অর্থ ভেঙে দেয়া। সারা মাস রোজা শেষ করে আল্লাহর নির্দেশে ঈদুল ফিতরের দিন আনন্দ উদযাপনের মধ্যে দিয়ে দিনটি অতিবাহিত করা।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদীনায় এলেন, তিনি বললেন, ‘তোমাদের দুটি দিবস ছিল, যাতে তোমরা খেলতে। আল্লাহ তাআলা ওই দুটি পরিবর্তন করে তোমাদের জন্য উত্তম দিবস দিয়েছেন: ঈদুল ফিতর দিবস ও ঈদুল আযহা দিবস। (বর্ণনায় নাসায়ী) অতএব কাফিরদের ঈদে অংশ নেয়া বৈধ নয়; কেননা তা কোনো ধর্ম, বিধান বা জীবন পদ্ধতির স্পষ্টতম আলামত।’
আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَهُمۡ عَمَّا جَآءَكَ مِنَ ٱلۡحَقِّۚ لِكُلّٖ جَعَلۡنَا مِنكُمۡ شِرۡعَةٗ وَمِنۡهَاجٗاۚ
ঈদুল ফিতরের নামাজের আরবী নিয়ত:
নাওয়াইতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’য়ালা রাকআতাই সালাতিল ঈদিল্ ফিত্রি মা’আ সিত্তাতি তাক্বীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা’য়ালা ইক্তাদাইতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি- আল্লাহু আকবর।
ঈদুল ফিতরের নামাজের বাংলা নিয়ত:
আমি কাবামুখী হয়ে আল্লাহ্র (সন্তুষ্টির) জন্য অতিরিক্ত ছয় তাকবীরের সঙ্গে ঈদুল ফিতরের দুই রাকআত ওয়াজিব নামাজ এই ইমামের পিছনে আদায়ের নিয়ত করলাম- আল্লাহু আকবর।
ঈদুল ফিত্রের নামাজ পড়ার নিয়ম:
প্রথম রাকআতঃ ইদুল ফিত্রের দুই রাকআত নামাজের নিয়ত করে তাকবীরে-তাহ্রীমা বলে হাত বাঁধবেন (অন্যান্য নামাজের নিয়ম অনুযায়ী)। অতঃপর মনে মনে ছানা পড়বেন। তারপর ইমাম সরবে ও মুক্তাদিগণ নীরবে পরপর তিনটি তাকবীর বলবেন।
এই তাকবীর তিনটির প্রথম দুইটি বলার সময় উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠানোর পর নিচের দিকে ছেড়ে দিবেন (ঝুলিয়ে রাখবেন)। তৃতীয় তাকবীর বলার পর হাত বাঁধবেন।
তারপর ইমাম যথানিয়মে (অন্যান্য নামাজের নিয়ম অনুযায়ী) আউযুবিল্লাহ্ ও বিসমিল্লাহ্-সহ সূরা ফাতেহা এবং অন্য একটি সূরা পড়ে প্রথম রাকআত শেষ করবেন।
দ্বিতীয় রাকাতঃ এই রাকাতে ফাতিহা ও সূরা পাঠ শেষে ইমাম যখন তাকবীর বলবেন, তার সঙ্গে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তাকবীরে হাত কান পর্যন্ত উঠাতে হবে এবং ছেড়ে দিতে হবে। আর চতুর্থবার তাকবীর বলে হাত না উঠিয়ে সোজা রুকুতে চলে যেতে হবে। এরপর সেজদা আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর পর ইমাম মিম্বারে উঠে দুটি খুতবা পাঠ করবেন।
খুতবা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে এবং শেষ হলে ইমাম মুনাজাতের মধ্য দিয়ে নামাজ শেষ করবেন।
মহান আল্লাহ মাহে রজানের উক্তসব আমল-ইবাদতে যথাসাধ্য আমাদের অংশগ্রহণের এবং সংশ্লিষ্ট বিধানগুলো মেনে চলার তাওফীক দিন। আমীন।