আজ হিজরি রজব মাসের ২৬ তারিখ। আজ দিবাগত রাতে পবিত্র শবেমেরাজ। দুনিয়া ও আখেরাতের সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক আল্লাহতায়ালার হুকুমে পবিত্র এই রাতে সাত আসমান পেরিয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আরশে আজিম পর্যন্ত ঊর্ধ্বলোক পরিভ্রমণের সৌভাগ্য লাভ করেছিলেন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দিদার লাভ করে নবীজি (সা.) আবার একই রাতে দুনিয়ায় ফিরে আসেন।
এ কারণেই রাতটি মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। মুসলিম বিশ্ব অলৌকিক ও ঐতিহাসিক এই ঘটনার স্মারক হিসেবে প্রতি বছর রাতটিকে শবেমেরাজ হিসেবে পালন করে থাকে। ফার্সি শব শব্দের অর্থ রাত ও আরবি মেরাজ শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বারোহন বা ঊর্ধ্বগমন। বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হয় পবিত্র শবেমেরাজ। পবিত্র শবেমেরাজ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আজ বাদজোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আলোচনা সভা ও মোনাজাতের আয়োজন করেছে। এ উপলক্ষে দেশের সব মসজিদ, মাদরাসা, খানকা, ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন ওয়াজ মাহফিল, আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এ মহিমান্বিত রাতটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, নফল নামাজ আদায়, জিকির-আসকার, দোয়া-দরুদ ও ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে পালন করবেন। হজরত মুহাম্মদ (সা.) নবুয়ত লাভের একাদশ বছরের (৬২০ খ্রিস্টাব্দে) রজব মাসের এই রাতে পবিত্র কাবা থেকে বোরাক নামক বাহনে চড়ে প্রথমে পবিত্র বায়তুল মোকাদ্দাস পর্যন্ত সফর করেন। সেখানে অন্যান্য নবী-রসুলের সঙ্গে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করেন।
তারপর সেখান থেকে সপ্তম আসমান পেরিয়ে সিদরাতুল মুনতাহা পর্যন্ত হজরত জিবরাইল (আ.)-এর সঙ্গে পরিভ্রমণ করেন। এ সময় নবীজি (সা.) নভোমন্ডল, বেহেশত-দোজখ ও সৃষ্টির বিভিন্ন রহস্য প্রত্যক্ষ করেন এবং পূর্ববর্তী নবীদের সাক্ষাৎ লাভ করেন। পরে রফরফ নামক বাহনে নবীজি (সা.) আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের আরশে আজিম পর্যন্ত যাওয়ার ও মহান প্রভুর দিদার লাভের সৌভাগ্য লাভ করেন। নবীজি (সা.) আল্লাহর কাছ থেকে উম্মতে মোহাম্মদীর জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসেন।