আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া একটি মহৎ গুন। আমরা দৈনন্দিন জীবনে অনেক কাজেই করি, এর মধ্যে কোনটা ভাল আর কোনটা মন্দ। অনেক সময় মনের অজান্তেই অনেক মারাত্মক গুনাহ করে ফেলি, যা আমরা নিযেরা ও জানি না। গুনাহ থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এক মহান এবাদত ।
আরও পড়ুন:
- রাসুলুল্লাহ (সা.) রোগ-ব্যাধির সময় যে দোয়া পড়তেন
- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, দোয়া ও তাসবিহ
- ১১টি শ্রেষ্ঠ তাসবিহ, দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করুন
গুনাহ মাফের দোয়া:
আল্লাহ তাআলা সবচেয়ে বেশি খুশী হন তখনই যখন কোন বান্দা ভুল করে গুনাহ করে আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমার জন্য ফরিয়াদ করে ।
গুনাহ করে ফেললে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ক্ষমা প্রার্থনা নিয়ে বলেছেন, “এবং তোমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।” [সূরা মুযযাম্মিল ৭৩:২০]
আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَٱسۡتَغۡفِرۡ لِذَنۢبِكَ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۗ ١٩ ﴾ [محمد : ١٩]
অর্থাৎ তুমি ক্ষমা-প্রার্থনা কর তোমার এবং মুমিন নর-নারীদের ত্রুটির জন্য। (সূরা মুহাম্মাদ ১৯ আয়াত)
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, وَٱسۡتَغۡفِرِ ٱللَّهَۖ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ غَفُورٗا رَّحِيمٗا ١٠٦ ﴾ [النساء : ١٠٦]
অর্থাৎ আল্লাহর কাছে তুমি ক্ষমা প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা নিসা ১০৬ আয়াত)
আল্লাহ তাআলা সুরা নুহ-এ বলেন, ‘আর (নুহকে) বলছি, তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল। (সুরা নুহ : আয়াত ১০-১২)
বারবার তাগিদ দেয়া হয়েছে ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার জন্য। গুরুত্বের সঙ্গে বিধৃত হয়েছে তওবা ও ইস্তেগফারের কথা।
তওবা ও ইস্তেগফার দোয়া সম্পর্কে যা বলা হয়েছে: তওবা আরবি উচ্চারণ:
‘আস্তাগফিরুল্লাহাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুমু, ওয়া আতুবু ইলাইহি।’ অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, তিনি ব্যতীত কোনো মাবুদ নাই, তিনি চিরঞ্জীব ও চিরন্তন; এবং আমি তাঁর কাছে ফিরে আসি। (তিরমিজি, আবু দাউদ)।
অথবা ‘আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি জাম্বিওঁ ওয়া আতুবু ইলাইহি; লা হাওলা ওয়া লা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।’ অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই আমার সব পাপের, আমি তাঁর কাছে ফিরে আসি। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া গুনাহ থেকে বাঁচার ও নেক কাজ করার কোনোই শক্তি নেই। (মুসলিম ও তিরমিজি)।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে ‘নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে কিছু ভয় ও ক্ষুধা দ্বারা এবং কিছু ধন-সম্পদ-প্রাণ ও ফলের ক্ষতির মাধ্যমে পরীক্ষা করব। আর আপনি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দিন। যারা তাদের ওপর কোনো বিপদ-আপদ আসে; তখন তারা বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চিতভাবে তার দিকেই ফিরে যাব।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৫৫-১৫৬)
এছাড়াও পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর আমার বান্দা যখন আপনার কাছে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে; আমি তো কাছেই আছি। আমি দোয়া কবুল করি, যখন সে আমার কাছে দোয়া করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৬)
তওবা সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে ইমানদারেরা, তোমরা আল্লাহর কাছে খাঁটি তওবা করো, আশা করা যায় তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদের এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশে ঝরনাসমূহ প্রবহমান।’ (সুরা-৬৬ তাহরিম, আয়াত: ৮)।
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তওবাকারীদের ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২২২)।
প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (স:) গুনাহ থেকে মাফ পেতে তওবার পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি এমন দোয়া শিখিয়েছেন যা আমল করলে গুনাহ থেকে মাফ পাওয়া যায়।