১১টি শ্রেষ্ঠ তাসবিহ, জিকির দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করুন
১১টি শ্রেষ্ঠ তাসবিহ, জিকির দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করুন

আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় হল তাসবিহ বা জিকিরের মাধ্যমে রাব্বুল আলামীন আল্লাহকে স্মরণ করা। এই সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,  ‘যখন তোমরা নামাজ শেষ করবে তখন দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহর জিকির (তাসবিহ-তাহলিল) পাঠ করবে।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১০৩)। এছাড়া তাসবিহ পড়ার নিয়ম হিসেবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর কিছু তাসবিহ রয়েছে, যা পাঠ করা উত্তম। পবিত্র কোরআনের অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করো এবং সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো।’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৪১)

আরও পড়ুন:

১১টি শ্রেষ্ঠ তাসবিহ, জিকির – এই গুরুত্বপূর্ণ তাসবিহ সমূহ দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে যে কোন সময় পড়া যায়

بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيم – আরবি উচ্চারণ: বিসমিল্লাহির রহমা-নির রহি-ম।
অনুবাদ: শুরু করলাম আল্লাহর নামে, যিনি পরম করুণাময় ও অসিম দয়ালু।

১। আল্লাহু আকবার – Allahu Akbar – للّٰهُ أَكْبَر – আল্লাহু আকবার অর্থ আল্লাহ সবচেয়ে মহান। একে তাকবীর-ও বলা হয়।

২। লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ – La ilaha illallah – لَا إِلَٰهَ إِلَّا ٱللَّٰهُ –  আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো বস্তু কিংবা ইলাহ (রব) নেই।

৩। সুবহানাল্লাহ – Subhanallah – سُبْحَانَ ٱللَّٰهِ – সুবহানাল্লাহ অর্থ হল আল্লাহ তাআলা পুতঃপবিত্র, আল্লাহ মহান, সবার উপরে

৪। আলহামদুলিল্লাহ – Alhamdulillah – ٱلْحَمْدُ لِلَّٰهِ‎ – সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য

৫। আস্তাগফিরুল্লাহ – Astaghfirullah – أَسْتَغْفِرُ اللّٰهَ‎ – আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি। এ ছাড়াও রয়েছে সাইয়িদুল ইস্তিগফার, ক্ষমা প্রার্থনার শ্রেষ্ঠ দোয়া

৬। লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ -La Hawla Wala Quwwata illa Billah –  لا حَوْلَ وَلا قُوَّةَ إِلا باللَّهِ – আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির শক্তি নেই, যে অনিষ্ট দূর করতে পারবে, কিংবা কল্যাণ লাভে সাহায্য করবে।

৭। সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম -Subhanallahi Wa-Bihamdihi subhanallahil azeem – سُبْحَانَ اللهِ وَبِحَمْدِهِ سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيمِ – মহান আল্লাহ পবিত্র, সমস্ত প্রশংসা একমাত্র তারই। মহান আল্লাহ তিনিই, যিনি শ্রেষ্ঠতর।

৮। হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল, নি’মাল মাওলা, ওয়া নি’মান-নাসির -حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ، نِعْمَ -الْمَوْلَىٰ وَنِعْمَ النَّصِيرُHasbunallahu Wa Ni’mal Wakeel Ni’mal Maula Wa Ni’man Naseer – আল্লাহ তাআলাই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনিই হলেন উত্তম কর্মবিধায়ক; আল্লাহ তাআলাই হচ্ছে উত্তম অভিভাবক এবং উত্তম সাহায্যকারী।

৯। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা-শারিকালাহু লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু,  ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির – لا إلهَ إلاَّ اللَّه وحْدهُ لاَ شَرِيكَ لهُ، لَهُ المُلْكُ، ولَهُ الحمْدُ، وَهُو عَلَى كُلِّ شَيءٍ قَدِيرٌ – la ilaha illallah wahdahu la sharika lahu lahul mulku wa lahul hamdu wa huwa ala kulli shay in qadir – একমাত্র মহান আল্লাহ্ তায়ালা ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই। সমস্ত রাজত্ব একমাত্র তাঁরই, সমস্ত প্রশংসা তাঁরই, তিনি সকল কিছুর উপর সর্বশক্তিমান।

১০। লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ্ জালিমীন -لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ – আপনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। আমরা আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। অবশ্যই আমরা পাপী।

১১। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ – আল্লাহ তায়ালা ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, এবং মুহাম্মদ (সঃ) তাঁর রাসুল।

এই তাসবিহগুলো দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে যে কোন সময় পড়া যায়। আল্লাহ বলেছেন, “যারা দাঁড়িয়ে, বসে এবং শুয়ে পড়ে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং আসমানসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে বলে, ‘হে আমাদের রব, আপনি এসব বিনা কারণে সৃষ্টি করেননি। আপনি পবিত্র মহান। অতএব আপনি আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।'”(সুরা আলে ইমরান – ৩:১৯১)। এখানে কোনটি কতবার পড়তে হবে এ বিষয়ে অনেক লেখা রয়েছে, তবে আপনি যতবার পড়তে চান, পড়তে পারেন।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্‌ বলেছেন, আল্লাহর অধিক যিকরকারী পুরুষ ও যিকরকারী নারী-তাদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত রেখেছেন ক্ষমা ও মহাপুরষ্কার। (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৩৫)

এ ছাড়া উপরেল্লিখিত জিকিরগুলো পড়া শেষ করে দুরুদ শরিফ পাঠ করা ভাল এবং পবিত্র কোরানের এই আয়াতটি রিজিক বৃদ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ

দুরুদ শরিফ বাংলা উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ, ওয়া আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহীম, ওয়া আলা আ-লি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদ, ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা আলা ইব্রাহীম, ওয়া আলা আ-লি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ

তাসবীহ এবং জিকর উভয়ই ইসলামিক ভাষা যা আল্লাহকে স্মরণ করা বা স্মরণ করার কাজকে বোঝায়। যাইহোক, দুটির মধ্যে একটি সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে।

তাসবিহ ও জিকিরের মধ্যে পার্থক্য কি ?

আমরা প্রায়ই এই দুই শব্দ শুনি। কিন্তু এগুলো আসলে কি? আসো, খুব সহজ করে বুঝে নিই।

  • তাসবিহ কী?

তাসবিহ মানে হলো আল্লাহর প্রশংসা করা। যেমন, আমরা বলি “সুবহানাল্লাহ” (আল্লাহ পবিত্র), “আলহামদুলিল্লাহ” (আল্লাহর নামে সব প্রশংসা)। এইভাবে আল্লাহর মহিমা গান করাটাই হলো তাসবিহ।

  • জিকির কী?

জিকির আরো বড় একটা শব্দ। এর মানে হলো আল্লাহকে স্মরণ করা। তাসবিহও জিকিরের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু জিকিরে আরো অনেক কিছু আছে। যেমন, আল্লাহর নামগুলো বলা, তাঁকে ধন্যবাদ জানানো, তাঁর একত্ব ঘোষণা করা।

তাহলে পার্থক্যটা কোথায়?

  • তাসবিহ: শুধু আল্লাহর প্রশংসা।
  • জিকির: আল্লাহকে স্মরণ করার সব ধরনের কাজ।

উদাহরণ:

  • তাসবিহ: সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
  • জিকির: আল্লাহর ৯৯টি নাম বলা, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আস্তাগফিরুল্লাহ, ওয়াল্লাহু আকবার

সহজ কথায়:

তাসবিহ হলো জিকিরের একটা অংশ। যখন আমরা আল্লাহর নাম জিকির করি, তখন আমরা আসলে তাঁর প্রশংসাও করছি, অর্থাৎ তাসবিহও করছি।

3 COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here