প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পদ্মা সেতুর পর মেট্রোরেল উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নের যাত্রায় জনগণের মাথার মুকুটে অহংকারের আরও একটি পালক যোগ হয়েছে।’
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ছয় মাসের ব্যবধানে দেশের ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক স্থাপন করে দেশের প্রথম এলিভেটেড মেট্রোরেল উদ্বোধনের পর এক নাগরিক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বেলা ১১টায় উত্তরার ১৫ নম্বর সেক্টরের ‘সি’ ব্লকের মাঠে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এ বৃহৎ অবকাঠামো উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এই সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা।
তিনি বলেন, মেট্রোরেলের উদ্বোধনের ফলে একই সঙ্গে প্রযুক্তিতে চারটি মাইলফলক ছুঁলো বাংলাদেশ। প্রথমত, মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে প্রথম বৈদ্যুতিক যানের যুগে প্রবেশ করলো। তৃতীয়ত, ডিজিটাল রিমোট কন্ট্রোল যান এটি, যেটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি ধাপ। চতুর্থত, বাংলাদেশ দ্রুত গতি সম্পন্ন যানের যুগে প্রবেশ করলো। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলবে মেট্রোরেল।
সকালে দিয়াবাড়ি স্কুলের মাঠে উপস্থিত হয়ে প্রথমে ফলক উন্মোচন করে মেট্রোরেলের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি রাজধানীর দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ম্যাস ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬-এর দিয়াবাড়িতে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দিনটি উপলক্ষ্যে স্মারক ডাকটিকেট, ৫০ টাকার ম্মরক নোট, খাম এবং ডাটা কার্ড অবমুক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাংলাদেশে জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রওশন আরা মান্নান এমপি।
এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী এবং ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক মেট্রোরেলের বক্তব্য দেন।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২৪ জুন মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন যা এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত। মোট ২২,০০০ কোটি টাকার মধ্যে জাইকা (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি)প্রায় ১৬,৬০০ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা প্রদান করেছে।
প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রীঃ
প্রধানমন্ত্রী টিকেট কাউন্টার থেকে মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে ইটিকেট ক্রয় করে মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রী হন। তাঁর বোন শেখ রেহানাও টিকিট কেটে তাঁর সঙ্গী হন। তিনি স্টেশনে একটি গাছের চারাও রোপণ করেন।
এরপর মেট্রোরেলটি প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে দুপুর ১টা ৫২ মিনিটে উত্তরার দিয়াবাড়ীতে স্টেশন থেকে রওনা দিয়ে দুপুর ২টা ১১ মিনিটে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায়।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রায় ২০০ জনের মতো আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন। এর মধ্যে কূটনীতিক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, মসজিদের ইমাম, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী আর সরকার ও দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।