নির্বাচনী ব্যবস্থা ও ভোটগ্রহণ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চার-পাঁচ দিনেও ভোট গণনা শেষ করতে পারে না। আর আমরা ইভিএমে চার-পাঁচ মিনিটে ফল ঘোষণা করে দিতে পারি। যুক্তরাষ্ট্রের আমাদের থেকে শিক্ষাদীক্ষা নেওয়া উচিত।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে আইইএস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট প্রদান ও কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সিইসি এ কথা বলেন।
এই উপনির্বাচনে আজ সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই ভোটগ্রহণ চলবে। এই আসনে প্রার্থী দিয়েছে প্রধান তিন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ ছয়টি দল।
এখানে বিএনপির প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন সকালে ভোট দেওয়ার পর অভিযোগ করে বলেছেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর লোকজন প্রতিটি কেন্দ্র থেকে আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। এ ভোট সুষ্ঠু হওয়ার বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই।’ যদিও এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ হাবিব হাসান। তিনি উল্টো অভিযোগ করে বলেছেন, ‘নির্বাচন এলেই বিএনপি এ ধরনের অভিযোগ করে। এখানে সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে। ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছে।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) একই কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন। ভোট দেওয়ার পর সিইসি নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে বুথ পর্যবেক্ষণ করেন এবং ভোটারদের সঙ্গেও কথা বলেন। পরে তিনি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন।
এ সময় উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম, এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নূরুল হুদা বলেন, ‘ভোটাররা কেন্দ্রে যাবেন নিজের গরজে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের বিষয়ে আমি সব সময় বলি, এটা দেখতে হবে গ্লোবালি, কাজ করতে হবে লোকালি। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের সংস্কৃতি দেড়শ বছরেরও বেশি। তা ছাড়া আরেকটি বিষয় হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ থেকে ভালো সিদ্ধান্ত আমরা গ্রহণ করি। আমার একটা কথা, তাদেরও আমাদের থেকে শিক্ষাদীক্ষা নেওয়া উচিত। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র চার-পাঁচ দিনেও ভোট গণনা করতে পারে না। ইভিএমে আমরা চার-পাঁচ মিনিটে ভোট গণনা করে কেন্দ্রে ফল ঘোষণা দিয়ে দিই। এই জিনিস যুক্তরাষ্ট্রে নেই। তাদের গণতান্ত্রিক অভিজ্ঞতায় সেটা এখনো পারেনি। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, তাদের কেন্দ্রীয় কোনো নির্বাচন কমিশন নেই।’
কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগের প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘একটি কেন্দ্রও কেউ দখল করেনি, কেউ দখলের পাঁয়তারা করেনি। বিএনপির পোলিং এজেন্ট কেন্দ্রে যায়নি। আমি খোঁজ নিয়েছি। আমার প্রিসাইডিং অফিসার আমাকে জানিয়েছেন, বিএনপির পোলিং এজেন্ট কেউ তাঁর কাছে রিপোর্ট করেনি। আর বিএনপির একজন সম্মানীয় ব্যক্তি আমাকে সকালে ফোন করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, কয়েকজন আসবেন আমার কাছে অভিযোগ জানাতে। আমি তাঁর জন্য অফিসে গিয়ে বসেছিলাম। তাঁরা আসেননি। পরে আমি আমার অফিসে বলে এসেছি, কেউ যদি অভিযোগ নিয়ে আসে সেটা গ্রহণ করতে। আমি অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। অভিযোগ সত্য নয়।’