করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। রোববার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এতথ্য জানান তিনি।
তসলিমা লিখেছেন, ‘আমি চিরকালই বড় দুর্ভাগা। এই যে গত বছরের মার্চ মাস থেকে একা আছি ঘরে, একখানা ইন্ডোর ক্যাট সঙ্গী, কোথাও এক পা বেরোলাম না, কাউকে ঘরে ঢুকতে দিলাম না, রান্না বান্না বাসন মাজা কাপড় কাচা ঝাড়ু মোছা সব একাই করলাম, কী লাভ হলো? কিছুই না। ঠিকই কভিড হলো।’
তিনি লিখেছেন, ‘গত এক বছরে শুধু একবার এক ঘণ্টার জন্য বাইরে বেরিয়েছিলাম, তাও দু’মাস আগে, টিকার প্রথম ডোজ নিতে। ওই ডোজটি কিছু অ্যান্টিবডি তৈরি করেছিল বলে হয়তো এ যাত্রা বেঁচে গেছি।’
তসলিমা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি চিরকালই বড় দুর্ভাগা। এক এক করে যদি লিখি কী কী ঘটেছে জীবনে, যা ঘটার কথা ছিল না, তাহলে তালিকা এত দীর্ঘ হবে যে পড়ে কেউ কূল পাবে না। আপাতত কভিড হওয়ার দুঃখটাই থাক। দুঃখ থাকাও হয়তো ঠিক নয়। কারণ ধীরে ধীরে আমি সুস্থ হয়ে উঠছি। কিন্তু হাজারো মানুষ, যারা সুস্থ হতে পারেনি! যারা শ্বাস নিতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছে কিন্তু পারেনি শ্বাস নিতে! দুঃখগুলো বরং তাদের জন্য থাক।’
বাংলাদেশি এই লেখিকা লিখেছেন, ‘এখন এইটুকু অন্তত ভালো লাগছে, এটি আর স্টিগমা নয় আগের মতো। কারো কভিড হলে সে লুকিয়ে রাখতো। কারণ কভিড হওয়াটা অনেকটা ছিল এইডস হওয়ার মতো। সমাজ ব্রাত্য করে দিত। এক বছরে এত মানুষকে ধরেছে এই কভিড যে স্টিগমাটা গেছে। কেউ আর বলতে দ্বিধা করেনা যে তার কভিড হয়েছে।’
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগ ওঠার পর আন্দোলনের মুখে ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হন তসলিমা।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারত। প্রতিদিনই দেশটিতে মৃত্যু ও আক্রান্তের রেকর্ড হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৪ লাখ ৩ হাজার ৭৩৮ জন। মারা গেছে ৪ হাজার ৯২ জন।