এম. মতিন, চট্টগ্রাম মেডিকেল থেকে:
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (দুপুর ১টা নাগাদ) ৪২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি সাড়ে ৪ শতাধিক। তাদের মধ্যে পুলিশ ও ৫ ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রয়েছেন।
তথ্যটি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, দুপুর ১টা পর্যন্ত ৪২ জনের লাশ এসেছে। লাশগুলো হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন জানান, হাইডোজেন পার অক্সাইড নামক ভয়ংকর দাহ্য পদার্থ কারখানার ভেতরে থাকায় এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
তিনি আরও বলেন, আগুন নেভাতে সেনাবাহিনীর ২শ’ সদস্যসহ ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী কাজ করছে। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ করছেন বলে জানান তিনি।
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানতে পেরেছি। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ৫ কর্মী রয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
তিনি আরও বলেন, আগুন লাগার বিষয়ে তদন্ত করে কারণ বের হরা হবে। আহত এক পুলিশ সদস্যকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তার একটি পা থেতলে গেছে।
চমেক হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ব্যাক্তিদের বেশিরভাগেরই শ্বাসনালী পোড়া। তাদের বাঁচাতে আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এদিকে নিহতদের মধ্যে ৫ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন, কুমিরা ফায়ার স্টেশনের নার্সিং অ্যান্টেনডেন্টস মনিরুজ্জামান (৩২), মমিনুল হকের (২৪) বাড়ি বাঁশাখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের মধুখালী গ্রামে। তিনি ফরিদুল আলমের ছেলে। অন্যজন একই উপজেলার পূর্ব চারিয়ার নাপোড়া এলাকার মাহমুদুর রহমানের ছেলে মো. মহিউদ্দীন (২৪), ভোলা জেলার হাবিবুর রহমান (২৬), রবিউল আলম (১৯) রবিউল বাঁশাখালীর চনপাড়ার এলাকার আবব্দুল মজিদের ছেলে। এর মধ্যে মহিউদ্দীন বেসরকারি পার্ক ভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
উল্লেখ্য, গতকাল (৪ জুন) শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে এ আগুনের ঘটনা ঘটে। ডিপোটির মালিক স্মার্ট গ্রুপের এমডি ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।
এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে, তবে এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।