ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুই অভিযোগে সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের ৮ বছরের কারাদণ্ড ও ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে আদালত। জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
ফেনীর সোনাগাজীতে যৌন হয়রানির শিকার মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দি ধারণের পর তার ভিডিও ক্লিপ ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ওই মামলা করা হয়। ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামশ জগলুল হোসেন বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে ২০ নভেম্বর উভয়পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৮ নভেম্বর তারিখ ধার্য করে আদালত। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নুসরাতকে প্রতিষ্ঠানটির সাইক্লোন শেল্টার ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় অধ্যক্ষের সহযোগীরা। এর পাঁচ দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে নুসরাতকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে তার মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেদিন নুসরাতের দেওয়ার জবানবন্দির ভিডিওচিত্র নিজের মোবাইল ফোনে ধারণ করেন থানাটির তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। পরে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।
এরপর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন মোয়াজ্জেম হোসেন। গত ১৫ এপ্রিল ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন আইনজীবী সৈয়দ সাইয়্যেদুল হক সুমন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে এ বিষয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। এরপর ২৭ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এ ঘটনায় মোয়াজ্জেমের সম্পৃক্ততা রয়েছে মর্মে প্রতিবেদন জমা দেন। এরপর আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ জুন রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরই মধ্যে তাকে বরখাস্ত করে পুলিশ বিভাগ। এ মামলায় গত ১৭ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয় আদালত।
এ দিকে নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় গত ২৪ অক্টোবর ফেনীর বিচারিক আদালতের রায়ে ১৬ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেওয়া হয়।