রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করার পর সেই দৃশ্য ভিডিও ধারণের জন্য আগের রাতেই সব পরিকল্পনা সেরে নেন চার ছাত্র। গত রোববার বিকেলে এ মামলার দুই আসামি জীবন ও জয় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তা জানিয়েছেন। পরে তাঁদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আজ বুধবার তাঁকে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে। আসামি প্লাবন তালুকদার ও রাফসানকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। মামলার ছয় আসামির মধ্যে এজাহারনামীয় বিশাল এখনো পলাতক। এ ছাড়া মামলার মূল আসামি মাহফুজুর রহমানের দুই দিনের রিমান্ড আজ মঙ্গলবার শেষ হয়েছে।
জানা যায়, নগরের একটি চায়ের দোকানে রাবি ছাত্রীকে ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফির পরিকল্পনা করা হয়। দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তা জানিয়েছেন। আসামিদের মধ্যে মাহফুজুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র। প্লাবন তালুকদার ও রাফসান বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আর তারেক মাহমুদ ওরফে জয়, জীবন ও বিশাল স্থানীয় তরুণ।
২৭ জানুয়ারি এ ঘটনায় ওই ছাত্রী মতিহার থানায় মামলা করেন। ওই রাতেই মতিহার থানা-পুলিশ মাহফুজুর, প্লাবন ও রাফসানকে এবং ৭ ফেব্রুয়ারি জীবন ও জয় নামের স্থানীয় দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করে।
মামলাটি তদন্ত করছেন রাজশাহী নগরের মতিহার থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রহমান। তিনি জানান, আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার সময় বলেছে, তারা ঘটনার আগের দিন রাজশাহী নগরের তালাইমারীর মোড়ের একটি চায়ের দোকানে বসে পরিকল্পনা করেন। মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে ওই সময় উপস্থিত ছিলেন তারেক মাহমুদ ওরফে জয়, জীবন, রাফসান ও প্লাবন তালুকদার। পরে তারা এই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত করে নেয় আসামি বিশালকে। মাহফুজুর তখন বন্ধুদের জানিয়েছিল ওই ছাত্রীটি তাঁকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু তিনি চান না। তাই তাঁকে (ছাত্রী) দূরে সরিয়ে দিতে ও তাঁর ধনী পরিবার থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করার পরিকল্পনা সাজায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, পাঁচ মাস আগে ওই ছাত্রীর সঙ্গে মাহফুজুর রহমানের বন্ধুত্ব হয়। গত ২৪ জানুয়ারি রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল স্কুলের পাশে বসে ওই ছাত্রী ও মাহফুজুর গল্প করছিলেন। এ সময় প্লাবন ফোনে মাহফুজুরকে তাঁদের ভাড়া বাসায় আড্ডা দিতে যেতে বলেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে মাহফুজুর ওই ছাত্রীকে নিয়ে প্লাবনের ভাড়া বাসায় যান। কিছুক্ষণ পর প্লাবন তাঁদের দুজনকে গল্প করতে বলে বাইরে চলে যান। তখন মাহফুজুর ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এ সময় জীবন ও অজ্ঞাতনামা দুজন এসে ‘তোরা অসামাজিক কাজ করেছিস’ বলে সাদা কাগজে তাঁদের দুজনের সই নেন এবং ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। তাঁদের কাছ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় চার হাজার টাকা আদায় করেন। এ অভিযোগে এই ছাত্রী যাতে মামলা করতে না পারে সেজন্য তাঁরা তাঁদের দুজনকে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করেন এবং সেগুলোর ছবি তোলেন ও ভিডিও করেন।