মিয়ানমারে সেনা শাসনের বিরুদ্ধে বড় ধরনের বিক্ষোভ সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ছাত্র ও চিকিৎসকরা।
চলমান বিক্ষোভের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দেশটির বাণিজ্যিক কেন্দ্র ইয়াঙ্গুনে তারা এই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।
গত পহেলা ফেব্রুয়ারি অং সান সু চিকে গ্রেপ্তার ও ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক জান্তার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই মাঠে নেমেছে বিভিন্ন পেশার মানুষ। রাজপথের এই আন্দোলনে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।
আদালতের আদেশ অমান্য করে বুধবার ১ হাজার ৮৬ জনকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠায় মালয়েশিয়া। এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সমাবেশের কর্মসূচি ছাত্র-চিকিৎসকদের।
রয়টার্স বলছে, ছাত্র ও চিকিৎসকদের অংশগ্রহণে ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভ সমাবেশ হচ্ছে। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে এই তথাকথিত ‘হোয়াইট কোট বিপ্লব’-এ তাদের সঙ্গে পেশাদার এবং সরকারি কর্মচারীও অংশ নিচ্ছেন।
একটি মানবাধিকার সংস্থার তথ্যমতে, দেশটিতে বিক্ষোভ সংক্রান্ত কর্মে জড়িত থাকার ঘটনায় বুধবার পর্যন্ত ৭২৮ জনকে গ্রেপ্তার, অভিযোগ কিংবা দণ্ডের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
আগের সপ্তাহের তুলনায় সম্প্রতি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে কিছুটা নমনীয় থাকতে দেখা গেছে। সেনাপ্রধান বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে গণতান্ত্রিক পথ অনুসরণ করছেন তারা।
মিয়ানমারে গত ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। তবে এনএলডি নিরঙ্কশ জয় পেলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। তারা নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে ওইদিন ভোরে সু চি ও দেশটির প্রেসিডেন্টসহ এনএলডির শীর্ষ বেশ কিছু নেতাকে গ্রেপ্তারের পর এক বছরের জন্য মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের পর গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও গ্রেপ্তার নেতাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে সাধারণ মানুষ। এরই মধ্যে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতায় তিন আন্দোলনকারী ও এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।