১১২ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ জন আলফ্রেড টিনিসউডের মৃত্যু হয়েছে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস মঙ্গলবার জানিয়েছে যে কয়েক মাস আগে তাকে বিশ্বের প্রবীণতম পুরুষ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।
টিনিসউড সোমবার উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের সাউথপোর্টে একটি কেয়ার হোমে “সংগীত ও ভালোবাসায় ঘেরা পরিবেশে” শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
We’re saddened to learn of the passing of John Tinniswood, who has died aged 112.
John, who became the world’s oldest man earlier in 2024, died at the care home he resided at in Southport, UK.https://t.co/oBftZjicgs
— Guinness World Records (@GWR) November 26, 2024
১৯১২ সালের আগস্টে লিভারপুলে জন্মগ্রহণকারী টিনিসউড তার স্ত্রী ব্লডওয়েনের সঙ্গে এক নৃত্য অনুষ্ঠানে দেখা করেন এবং ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাকে বিয়ে করেন। সেই সময় তিনি রয়্যাল আর্মি পে কর্পসে কাজ করতেন, যা আর্থিক এবং খাদ্য সরবরাহের দায়িত্বে ছিল।
দুটি বিশ্বযুদ্ধ ও দুটি মহামারি পার করেছিলেন
দুটি বিশ্বযুদ্ধ ও দুটি বৈশ্বিক মহামারি পার করেছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক পুরুষ জন টিনিসউড। তিনি তার স্ত্রী ব্লডওয়েনের সঙ্গে লিভারপুলে একটি ড্যান্স পার্টিতে পরিচিত হয়েছিলেন। ১৯৪২ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। ১৯৮৬ সালে ব্লডওয়েনের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাঁরা ৪৪ বছর একসঙ্গে ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রয়্যাল মেইলে কাজ শুরু করেন আলফ্রেড। পরে শেল ও বিপি কোম্পানিতেও অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন। অবসরে গিয়েছিলেন ১৯৭২ সালে। পরিবার জানিয়েছে, তিনি একটি ‘সক্রিয় অবসরকালীন জীবন’ কাটিয়েছিলেন।
লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের ভক্ত
লিভারপুল ফুটবল ক্লাবের একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন জন টিনিসউড। তিনি ক্লাবের ৬৬টি শীর্ষ ট্রফির মধ্যে মাত্র দুটি মিস করেছিলেন।
দীর্ঘায়ুর রহস্য
তার দীর্ঘায়ুর রহস্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, “আপনি হয় দীর্ঘজীবন পান, নয়তো স্বল্পজীবন। এ নিয়ে আপনি তেমন কিছুই করতে পারবেন না”। তবে তিনি মানসিকভাবে সক্রিয় ছিলেন, খবর রাখতেন এবং নিজের আর্থিক দায়িত্ব নিজে সামলাতেন। এসব হয়তো তার দীর্ঘ জীবনের জন্য অবদান রেখেছিল।
পরিবারের স্মৃতি
পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—আলফ্রেডের মধ্যে অনেক ভালো গুণ ছিল। তিনি বুদ্ধিমান, সিদ্ধান্ত প্রণেতা, সাহসী, যে কোনো সংকটের সময় শান্ত, গাণিতিক প্রতিভাসম্পন্ন এবং একজন অসাধারণ আলাপী মানুষ ছিলেন। এসব গুণই তাঁকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রয়্যাল আর্মিতে তাঁর সামরিক সেবায় অবদান রেখেছিল।
জন টিনিসউডের মৃত্যুতে গোটা বিশ্ব শোকাহত। তাঁর দীর্ঘ জীবন ও অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।