ইন্ডিয়ান ভিসা বা ভারতীয় ভিসা আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে বাংলাদেশীরা অনেকেই জানতে চায়। প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে অনেকের ভিসা আবেদন বাতিল হবার সম্ভাবনাও থেকে যায়। এছাড়া অনেকেই ভিসা আবেদনের জন্য তৃতীয় কোন মাধ্যমের কাছে ধর্না দেন, এতে টাকাও খরচ হয় প্রচুর। অথচ একটু সতর্ক হলে, একটু সময় ব্যয় করে ইন্ডিয়ান ভিসার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিজে নিজে আবেদন করতে পারলে অযথা বাড়তি টাকা কেন খরচ করবেন? ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশনের জন্য সহজ কিছু ধাপ জানলে আর এর কাছে ওর কাছে ছুটতে হবে না।
আরো পড়ুন:
- ঢাকা টু কলকাতা, কিভাবে যাবেন বাস, ট্রেন, বিমান
- মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী, ঢাকা থেকে কলকাতা ট্রেনের ভাড়া, টিকেট
অনলাইনে ভিসা আবেদনঃ
ভারতীয় ভিসা’র জন্য বর্তমানে “ষ্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া” পরিচালিত ভারতীয় ভিসা সেন্টারের ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন জমা দিতে হয়।
ভারতীয় ভিসা আবেদন ফরমঃ নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন
https://indianvisa-bangladesh.nic.in/visa/Registration
বাংলাদেশে ১২টি ভারতীয় ভিসা আবেদনপত্র কেন্দ্রঃ
ক্রমিক নং | ভিসার ধরন | ভ্রমণের উদ্দেশ্য |
১ | ট্যুরিস্ট | • আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব অথবা সন্তানদের সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে • বেড়ানো, তীর্থযাত্রা বা অন্য যে-কোন উদ্দেশ্যে |
২ | ট্রানজিট | • বাংলাদেশী নাগরিকরা ভারতের ওপর দিয়ে সড়ক, নৌ বা বিমানপথে যাতায়াতে ইচ্ছুক। • বিমানবন্দর/সমুদ্রবন্দর দিয়ে সরাসরি যাতায়াতের জন্য কোন ভিসার প্রয়োজন নেই |
৩ | ডাবল এন্ট্রি ট্রানজিট ভিসা | • বাংলাদেশী নাগরিকরা ভারতের ওপর দিয়ে বিমান/ রেল/সড়ক/সমুদ্রপথে তৃতীয় কোন দেশে ভ্রমণেচ্ছু • তাৎক্ষণিক বিমান/রেল/সড়ক/সমুদ্রপথের নিশ্চিত টিকেট প্রদর্শন করতে হবে |
৪ | বিজনেস | • যথাযথ কর্তৃপক্ষের রেজিস্ট্রিকৃত বা স্পন্সরকৃত বাংলাদেশের প্রকৃত ব্যবসায়ী/বিনিয়োগকারী • বিজনেস ভিসাধারীর স্ত্রী/স্বামী, শিশু সন্তান ও পিতা-মাতা এন্ট্রি (x) ভিসার আবেদন করার যোগ্য |
৫ | স্টুডেন্ট | • বাংলাদেশী ছাত্র যারা সরকারি, সরকার-অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুলে ভর্তি হয়েছেন |
৬ | এমপ্লয়মেন্ট | • ভারত সরকারের নিয়োগকৃত বাংলাদেশী পেশাজীবী • উভয় দেশের খ্যাতনামা সংস্থায় নিয়মিত এসাইনমেন্টপ্রাপ্ত ভারত ভ্রমণেচ্ছু বাংলাদেশী পেশাজীবী • এ ধরনের ভিসা আবেদনকারীর স্ত্রী/স্বামী, শিশু সন্তান ও পিতা-মাতা এন্ট্রি ভিসার আবেদন করার যোগ্য |
৭ | মেডিক্যাল | • স্বীকৃত ডাক্তার/ক্লিনিক/হাসপাতালের অগ্রিম অ্যাপয়েন্টমেন্টসহ বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য ভারত ভ্রমণেচ্ছু বাংলাদেশী নাগরিক |
৮ | ডাবল এন্ট্রি ভিসা (এক্স-ডাবল এন্ট্রি) | • তৃতীয় দেশের ভিসার ( দূতাবাস সাক্ষাৎকার )জন্য আবেদনকারী বাংলাদেশি নাগরিকরা, যাদের প্রতিনিধি মিশন ভারত থেকে বাংলাদেশে একযোগে স্বীকৃত, তারা ডাবল এন্ট্রি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারে |
৯ | জার্নালিস্ট | • খ্যাতিমান মুদ্রণ ও বৈদ্যুতিক মাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক/অন্যান্য প্রতিনিধিরা • ভ্রমণেচ্ছু সাংবাদিক/প্রতিনিধিরা জার্নালিস্ট ভিসা পাবার যোগ্য |
১০ | রিসার্চ | • ভারতে চাকরি/ফেলোশিপ প্রাপ্ত |
১১ | এন্ট্রি |
|
১২ | কনফারেন্স | ভারতে অনুষ্ঠেয় সম্মেলন, সেমিনার বা কর্মশালায় যোগদানের জন্য ভ্রমণেচ্ছু বাংলাদেশী নাগরিক |
- ভিসার জন্য আবেদনের আগে ভারতীয় হাই কমিশনের ওয়েবসাইটে ভিসার ধরণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পড়ুন: [http://www.ivacbd.com/For-Bangladeshi–1339649634]
- **ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে ভিসা আবেদনের বিভিন্ন প্রশ্ন ও উত্তর: ** এই পাতাটি দেখুন।
ভারতীয় ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
১. পাসপোর্ট:
- মূল পাসপোর্ট ভিসা আবেদনের তারিখের ৬ মাসের জন্য বৈধ হতে হবে।
- পাসপোর্টে অন্তত দুটি সাদা পাতা থাকতে হবে।
- পাসপোর্টের অনুলিপি (দ্বিতীয় ও তৃতীয় পৃষ্ঠা এবং বৈধতার মেয়াদ বাড়ানোর এসডোর্সমেন্ট, যদি থাকে) সংযুক্ত করতে হবে।
২. পুরোনো পাসপোর্ট:
আবেদনপত্রের সাথে সব পুরোনো পাসপোর্ট জমা দিতে হবে।
৩. ছবি:
একটি সদ্য তোলা (৩ মাসের বেশি পুরোনো নয়) ২x২ (৩৫০x৩৫০ পিক্সেল) সাইজের রঙিন ছবি।
ছবিতে পুরো মুখমন্ডল দেখা যাবে এবং ছবির পিছনের অংশ সাদা হতে হবে।
৪. আবাসস্থলের প্রমাণপত্র:
- জাতীয় পরিচয়পত্র এবং বিদ্যুৎ, টেলিফোন, গ্যাস বা পানির বিলের অনুলিপি।
৫. পেশার প্রমাণপত্র:
- সরকারি কর্মচারী (চাকুরীজীবী): সরকারি আদেশের অনুলিপি।
- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী: নিয়োগকর্তার কাছ থেকে প্রमाणপত্র।
- স্ব-শম্পৃক্ত ব্যক্তি: বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক দেওয়া ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের অনুমতির একটি কপি।
- শিক্ষার্থী: শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পরিচয়পত্রের একটি কপি।
- অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী: অবসর সময়ের কাগজপত্রের একটি কপি।
৬. আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণপত্র: আবেদনকারীদের জন প্রতি ১৫০ মার্কিন ডলার সমমানের বৈদেশিক মুদ্রার এনডোর্সমেন্ট বা আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড অথবা সর্বশেষ ৩ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্টের অনুলিপি।
৭. অনলাইন আবেদন: আবেদনকারীকে অনলাইন এপ্লিকেশন ফরম এ দেওয়া নির্ধারিত স্থানে ছবি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
৮. সাক্ষাৎকার: সাক্ষাতের দিন আবেদনপত্রের সাথে সব পুরোনো পাসপোর্ট জমা দিতে হবে। সব পুরোনো পাসপোর্ট ছাড়া আবেদনপত্র অসম্পূর্ণ বলে বিবেচিত হবে।
৯. সাক্ষাৎ পদ্ধতি: বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ক্ষেত্রে সব ধরনের ভারতীয় ভিসার সাক্ষাৎ ওয়াক-ইন পদ্ধতিতে গ্রহণ করা হয়।
বিঃদ্রঃ:
- ভিসার ধরণ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকায় কিছু পরিবর্তন হতে পারে।
- সর্বশেষ তথ্যের জন্য ভারতীয় হাই কমিশনের ওয়েবসাইট https://www.hcidhaka.gov.in/ দেখুন।
ইন্ডিয়ান ভিসার জন্য কত টাকা লাগে:
বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য:
- ভিসা আবেদন ফি: কোন ভিসা ফি নেই।
- ভিসা প্রসেসিং ফি (ভিপিএফ): ৮০০ টাকা।
ভারতের হাই কমিশন, ঢাকা, বাংলাদেশ
প্লট নং. ১-৩, পার্ক রোড, বারিধারা, ঢাকা-১২১২
টেলিফোন: +৮৮০-২-৫৫০৬৭৩৬৪
ইপিএবিএক্স: +৮৮০-২-৫৫০৬৭৩০১-৩০৮ এবং< +৮৮০-২-৫৫০৬৭৬৪৫-৬৪৯
ফ্যাক্স নম্বর: +৮৮০-২-৫৫০৬৭৩৬১
জরুরী যোগাযোগ নম্বর
০১৯৩৭৪০০৫৯১
অফিসের সময়সূচি
রোববার থেকে বৃহস্পতিবার – ০৯০০ ঘটিকা থেকে ১৭৩০ ঘটিকা
দ্রষ্টব্য:
- ভিসা সম্পর্কিত এই তথ্য পরিবর্তন হতে পারে।
- ভিসার জন্য আবেদনের আগে, প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র সংগ্রহ করুন এবং যথাযথভাবে সেগুলি পূরণ করুন।
- আপনার আবেদন সম্পর্কে কোন প্রশ্ন বা সন্দেহ থাকলে, কনস্যুলেট অফিসে যোগাযোগ করতে দ্বিধা করবেন না।
- সর্বশেষ তথ্যের জন্য ভারতীয় হাই কমিশনের ওয়েবসাইটটি দেখুন।